এবিএনএ: দুদকের অবৈধ সম্পদের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট পুনরায় জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান এ জামিন মঞ্জুর আদেশ দেন। সিনিয়র আইনজীবী ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর এহসানুল হক আসামি পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন।
দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীরের বিরোধীতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে সম্রাটের র্সাবিক দিক বিবেচনা করে দুই শর্তে জামিনের আদেশ দেন আদালত। শর্তের মধ্যে রয়েছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশে যেতে পারবেন না এবং পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। বিচারক আদেশ দেওয়ার আগে বলেন, সম্রাট দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রয়েছেন। হাইকোর্টের আদেশ ও অসুস্থার কারণে তাকে জামিন দেওয়া হলো।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে হাসপাতাল থেকে সম্রাটকে আদালতে হাজির করে কারাকর্তৃপক্ষ। এরপর বেলা ১১টার সময় বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। শুনানির শুরুতেই চার্জ শুনানি পেছাতে সম্রাটের পক্ষে সময় আবেদন করেন আইনজীবী। এ আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়। এরপর জামিন শুনানি হয়।
এর আগে গত ১১ মে সম্রাটের একই আদালত এ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। ওইদিন রাতেই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তি পেলেও তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএসএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর গত ১৮ মে উচ্চ আদালত দুদকের আবেদনে সম্রাটের জামিন বাতিল করে সাত দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী সম্রাট গত ২৪ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত কারাগার পাঠান।
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলো থেকে প্রচুর কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। গত ২২ মার্চ দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ ধার্য করে মামলাটি বিশেষ জজ আদালত-৬’এ পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়।